Wednesday, October 31, 2007
হোস্টেল
একই ছাদের নীচে থাকলে মনের সাথে মনের একটা নৈকট্য সৃষ্টি হয়ে যায়। বারবার দেখা হয়, অনেক কথা হয়, সুখদুঃখ ভাগাভাগি হয়। আমি দাম্পত্যজীবনের কথা বলছি না, হোস্টেল লাইফের কথা বলছি। কাছাকাছি বয়সের অনেকগুলো মানুষ একসঙ্গে থাকে ঘুমায় খায় দায়। যেন একটা গোষ্ঠি তৈরি হয়। হোস্টেল জীবনের ভাল আর মন্দ নিয়ে এই ব্যাপারে অভিজ্ঞ আর অনভিজ্ঞদের নানারকম মত আছে। তাই মোটমিলিয়ে চার দলের চারটা রকম দাঁড়িয়ে যায় বক্তব্যের। যেমন আমাদের দেশ আর সামাজিক অবস্থা, তাতে আনন্দের ভাগটা ছেলেদের রাজকপালেই কিছুটা বেশি জোটে। গভীর রাতে বেরিয়ে গিয়ে দল বেঁধে হাঁটা ধরল, গান গাইতে গাইতে সূর্য জাগিয়ে ফেলল। মেয়েরাও খারাপ সময় কাটায় না। খাবার সময় ছাড়া হোস্টেলে ঘড়ি একটা মোটামুটি অচল যন্ত্র। রাত তিনটায় ঘুমাতে গেলেও মা বলবে না, এতক্ষণ জেগে থাকলে শরীর খারাপ করবে কিংবা দুপুর বারোটার দিকে হাই তুলতে তুলতে বিছানা ছাড়লেও বাবা বলবে না, অপদার্থকে আরো ঘুমাতে বল, এখনো সন্ধ্যা হয়নি। এসব মজার পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ার মত খারাপ পয়েন্টও আছে অনেক। তবে স্কুলের হোস্টেল লাইফের কথা ভাবলে একটু খারাপ লাগে। যারা ক্যাডেট কলেজে পড়ে, ক্লাস সেভেনের বাচ্চাকাল থেকেই নিয়মকানুনের শেকলের মধ্যে ঢুকে পড়তে হয়। প্রথম প্রথম বাড়ির জন্য মন কেমন করে, কান্না পেয়ে যায়। সেই কাজটাও করতে হয় লুকিয়ে। কারণ ওই বয়সে আবার বিশাল ইগো। ক্যাডেটে পড়া ছেলেমেয়েরা বের হয়ে আসার পর তিন রকম কথা বলে। একদল বলে তারা ছয় বছর বলতে গেলে কারাগারে কাটিয়েছে। আরেকদল মনে করে এমন মজার লাইফ আর হয় না। আর তৃতীয় দলের ধারণা ভাল মন্দের কোনটাই কোনটার থেকে বেশি না। তৃতীয় দলেই সদস্য বেশি। আমার নিজের কাছে স্কুল আমল থেকেই হোস্টেলে থাকাটা ঠিক পছন্দ হয় না। একটা গন্ডির মধ্যে থাকতে হয়। তাছাড়া পরিবারের মত ভালবাসা বা আবহ কি অন্য কোথাও পাওয়া যায়? এটা ঠিক যে এভাবে থেকে ওরা আমাদের থেকে খারাপ কিছু হয়ে যায় না। তারপরও কেন যেন আমার ভাল লাগে না কলেজে ওঠার আগে হোস্টেলে থাকাটা। সেক্ষেত্রে আমার জন্য সুখের কথা হল আমাকে ক্লাস সেভেনে থাকতে হোস্টেলে পাঠিয়ে দেয়ার আর কোন উপায় এখন নেই।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
3 comments:
আমাকে অবশ্য কখণই হোস্টেল এ থাকতে হয় নাই। ঐদিক থেকে হয়তো আমি লাকি... সবসময় বাবা-মা-ভাই-নিয়ে থেকেছি... সো খুব ইনজয় করি...
থ্যাকংস
কখনোই হোষ্টেলে না থাকার আভিজ্ঞতা-হলো জীবনের একটা বিচিত্র অভিজ্ঞতা মিস করা...
আমি মনে করি কিছুদিনের জন্য থাকলেও একটা মজা পাওয়া যায়...তবে আমি থেকেছি এমনভাবে ..কিছুদিন বাসা আবার কিছুদিন হল...যার কারনে পরিবার থেকে দুরে থাকার বেদনাটা পাইনি..আমার অভিজ্ঞতাটা পুরাটাই আনন্দের...
লেখিকার হোষ্টেলে থাকার বিচিত্র অভিজ্ঞতা আছে বলে মনে হচ্ছে না। তবে হোস্টেল সম্পর্কে যা বলেছেন, আমার মনেয় হয় ঠিকই আছে।
Post a Comment