Friday, October 19, 2007
বই
কিছুদিন আগে স্কুলজীবনে কেনা একটা বই অনেকদিন পর আবার পড়লাম। প্রজাপতি প্রকাশনের ‘রবিনহুড’। বিষয়বস্তু সেই মধ্যযুগের কিংবদন্তী রবিনহুড। বইয়ের শুরুতেই বলে নেয়া আছে, আদপেই যে এই নামের ঠিক এই চরিত্রের কোন লোক কখনো ছিল সে ব্যাপারটা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। সেটা নিয়ে আমি কখনোই মাথা ঘামাইনি। নটিংহ্যাম শহর, শেরউড জঙ্গল, ব্লু বোর সরাইখানা, তীর ছোঁড়া প্রতিযোগিতা সব মিলিয়ে রবিনহুডের দস্যুজীবনটা রঙ চড়ানো গল্পে খুব আকর্ষণীয় লাগার কথা। আমার লেগেছে। এখন এরকম কোন মানুষ থাকলে খারাপ হত না। পুকুরচোরদের শিক্ষা হত। সেই সময় রবিনহুড আমার খুব প্রিয় একটা চরিত্র ছিল। চরিত্র না বলে বলা উচিত ব্যাক্তিত্ব। আফসোস হত কেন কয়েকশ বছর আগে নটিংহ্যামে জন্ম নিলাম না। তাহলে আমি অবশ্যই শেরউডে থাকতাম। তখন জেনেছিলাম একটা ছবিও আছে কেভিন কস্টনারের, Robinhood, the prince of thieves. ছবির নামে আমার আপত্তি, রবিনহুড কখনোই ‘চোর’ ছিল না। এতদিন পর বইটা পড়ে ভাল লাগলেও শেরউডে চরে বেড়াতে মোটেও ইচ্ছা হয়নি। আগের মত মুগ্ধও হইনি। যখন খুব ভাল লাগা পুরানো কোন বই আবার পড়ি, আমি একটু বিচার করারও চেষ্টা করি আমার দৃষ্টিভঙ্গী, মানসিকতা কতখানি বদলেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অনুভূতি প্রথমবারের চেয়ে অনেকটা অন্যরকম হয়। একই ঘটনাকেই মস্তিষ্ক ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে। বনফুলের ছোটগল্প ‘পাঠকের মৃত্যু’র মত, যেখানে একটা খুব ভাল লাগা গল্পের বই কয়েক বছরের ব্যবধানে একজন পাঠকের কাছে নিতান্ত পানসে হয়ে যায়। ভাগ্যিস মানুষ বইয়ের মত স্থির না। সময়ের সঙ্গে মানুষ যদি না বদলাতো তাহলে কিছুতেই একজন মানুষকে বেশিদিন ভাল লাগতো না।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment