হঠাৎ মনে হল অনেকদিন এই খাতাতে কিছু লেখা হয়নি। আসলে কিন্তু অনেকদিন না, দিনের কিছুটা সময় এখন বই খাতা নামের কিছু বস্তুর সামনে বসে হাই তোলার জন্য বরাদ্দ করার চেষ্টা করছি বলে বোধ হয় সব সুখের কাজকেই মনে হয় যেন বহুদিন করা হয়নি। আজকে যখন কম্পিউটারের সামনে বসলাম আর ভাবতে শুরু করলাম কি লিখি কি লিখি, তখন মনে পড়ে গেল আমি সেদিন মাত্র একটা টিউটোরিয়াল দিয়ে এলাম যেটার বিষয়ই ছিল - লেখা। মজার ব্যাপার হল কয়েক মাস আগেও আমি জানতাম না যে এই লেখা কাজটা নিয়েই গাদা গাদা বই লিখে ফেলা যায়, লেখা নিয়ে গুরুগম্ভীর পর্যালোচনা করা যায়, লেখা ব্যাপারটা নিয়ে ক্লাসে অনেককিছু পড়ানো যায় এবং লেখা রাতারাতি এমনই জটিল আর প্যাঁচানো একটা বিষয় হয়ে উঠতে পারে যে এটা নিয়ে পরীক্ষায় প্রশ্ন আসলে তার উত্তর দিতে না পারা আসলেই সম্ভব।
ব্লগের ভেতর লেখার সুবিধা অনেক; একটা তৃপ্তি জন্মে যে আমার লেখাটা কেবল আমার খাতাপত্রের ফাঁকফোকরে গুমরে মরছে না বরং টাটকা থাকতে থাকতেই দেখ কেমন ‘ছাপা’ হয়ে গেল, সে বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন। সেই ছাপার জন্য কারো কাছে ধরনাও দিতে হয়না, নিজেই লেখক নিজেই প্রকাশক। শুধু কি দেশের সীমার মধ্যে? এক মুহূর্তে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিলাম। কেউ না পড়লেও বা কি। আমি কি জানতে পারছি নাকি। নিউজপেপারের প্রত্যেকটা লেখাই কি কেউ না কেউ পড়ে? কিন্তু কথা হল আমি এখানে এই যে সব লিখছি এবং লিখেছি এগুলো আসলে কি। পৃষ্ঠা উল্টেপাল্টে দেখলাম মোটামুটি সবই আমার নিজেকে নিয়ে। আমি কি খাই কি পরি কি করি কি করতাম এই টাইপ। তবে কি নিজেকে নিয়ে লেখাই সবচেয়ে সহজ? সহজ হোক বা না হোক, নিরাপদ যে এ ব্যাপারে সন্দেহ নেই। আমি বিগত মাসের তিন তারিখে নিজের মধ্যমস্তকে একখানা নির্জীব অর্ধপক্ককেশ আবিষ্কার করিয়াছি, এমনটা লিখলে কেউ মানহানি মামলা করার জন্য তেড়েফুঁড়ে আসবে না।
লিখতে বসে পরীক্ষার কথা মনে পড়ল। একবার কলেজের বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় অল্প সময়ের মধ্যে অনেক লেখা বাকী কিন্তু কিছুতেই advantage আর environment এই দুইটা শব্দের বাংলা মনে পড়ছিল না। অথচ আমি কিনা এসবের বাংলাই জানি। দুই দিনের যোগীর মত অবস্থা। বেঞ্চের সামনে টিচার দাঁড়ানো, কাউকে জিজ্ঞেস করারও উপায় নেই। এও মনে হচ্ছিল যে কারো কাছে environment এর বাংলা জানতে চাইলে মনে মনে নাক সিঁটকে ভাববে, “ঢং দেখে বাঁচি না, ভাবখানা এমন যেন বিলাতফেরত, ভাংলা ভলতে পাড়ি না”। আবার ইংলিশ পরীক্ষার সময় হত উল্টো। দেখা গেল পর্যালোচনার বদলে যে discussion লিখতে হয় সেটা বের করতে বেশ খানিকটা সময় লেগে যাচ্ছে। আমার মতে এটা সবারই হয়। প্রায়ই দেখা যায় যখন যেটা দরকার সেটা তো আসেই না, বরং অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা এসে মাথার চারপাশে ঘুরপাক খায়।
লেখা লেখা করে এতক্ষণ বসে কিসব লিখলাম? একে তো লেখার সংজ্ঞার মধ্যেও ফেলা যাচ্ছে না। লেখা আর হল না, হিজিবিজি আঁকিবুঁকি কাটা হল কেবল।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
1 comment:
hiji biji lekha :-P
tomar moto amio pari e vule jai dorkari shobdo gulo. tokhon ki j koshto hoi :(
Post a Comment