Tuesday, September 15, 2009

"ভালবাসা"

ছোট্টবেলার প্রেম আমার কালো মেম, কোথায় গেলে হারিয়ে...

ম্যারি অ্যানের সাথে যে আর কখনো অঞ্জনের দেখা হয়নি এমন না। এখনও দু’জন কাছাকাছি এলাকাতেই থাকে। অঞ্জনের পাড়ার উপর দিয়েই তাকে যেতে হয় প্রায়ই। দেখতে এখন সে ভীষণ অন্যরকম। ঝোলা গাল আর পাকা চুলের মাঝবয়েসী ম্যারি অ্যানের ক্ষয়ে যাওয়া নখও তার চোখ এড়ায় না। চোখাচোখি হয়ে যায় হয়ত অঞ্জন যখন মেয়েকে স্কুলে দিয়ে আসছে, বা ম্যারি অ্যান যখন বাবার জন্য ওষুধ কিনছে। দুরন্ত শৈশবে কিংবা অস্থির কৈশোরে ভাল লেগে যাওয়া মানুষগুলোকেকি আমরা আসলেই বিশেষভাবে মনে রাখি? মনে হয় না। বারান্দাতে তোয়ালে শুকাতে দিতে এলে হুট করে যখন রাস্তায় চোখ পড়ে যায়, কালো ফ্রেমের চশমা পরা অজানা আকর্ষণধারী নিষ্পাপ ছেলেটা যে এখন কালচে ঠোঁটের লম্বাটে একজন চোয়াড়ে যুবক, তাকে দেখে তো একমুহূর্তের জন্যও একবিন্দু অনুভূতির জন্ম হয় না। ঠিকই কাপড় গুছিয়ে বিকালের কাজের কথা ভাবতে ভাবতে ঘরে ঢুকে পড়ি। কলেজে পড়ার সময় যেই ক্লাসমেট হেঁটে যাবার সময় হৃদপিণ্ড লাফিয়ে উঠত, আজকে তার নাম কানে এলে ওই পাগলামির কথা ভেবে কি কারো হাসি পায় না? এমনকি পাঁচ ছয়টা বছরের দ্বিধাহীন পরম ভালবাসাবাসির ফল যখন দু’জনের বুকভাঙা বিচ্ছেদে গিয়ে ঠেকে, সময় না গড়াতেই সেই দু’জন কেমন চমৎকার মানিয়ে নেয়। তাই বলে কি সত্যিই এসবের কোন মূল্য ছিল না বা নেই? কোথাও না কোথাও সবগুলো ভাললাগারই নিশ্চয়ই ভূমিকা আছে। অথচ কি প্রচণ্ড অভিযোজনশীল আমরা। কিছুই মনে রাখতে চাই না। যেই নৌকাতে পা রেখে স্থিরতা আনতে পারি বলে মনে হয়, যেই সম্পর্কটা সমাজের চোখে জ্বলজ্বল করে জ্বলে, সেটাকেই ‘প্রকৃত ভালবাসা’ আখ্যা দিই। বাকিগুলো সব নিছক আকর্ষণ, বা গালভরা নাম ‘ইনফ্যাচুয়েশন’। মেয়েরা একটু আগে সংসারী হয়ে সকল মনোযোগ নতুন জীবনে প্রয়োগ করে, আর ছেলেরা একটু দেরিতে যাত্রা শুরু করায় কিছুদিনের জন্য খুব স্মৃতির জাবর কেটে নিজেকে ব্যথিত প্রমাণ করার সুযোগ পেয়ে যায়। তারপর সব ঠিকঠাক। ভালবাসা এতখানি মরণশীল! না কি না? মানুষ তো আবার ভানের রাজা। কোনটা আসলে ভান কে জানে। এত বছর গড়ালো, তবু সবকিছু একই আছে, কিছুই ভুলিনি-এটা? নাকি ওসব ক্ষণিকের মোহ ছিল, এখন আমি কিছুই ভাবি না-এটা?

নর-নারীর মধ্যকার ভালবাসাটা স্থায়ী একমুখী নাকি অস্থায়ী বহুমুখী? সময় যেদিকে ভাসিয়ে নেয়, বাঁচবার জন্য, ভাল থাকবার জন্য কি অদ্ভুত করেই না ভালবাসার নানারকম সংজ্ঞা তৈরি হয়। আজ এই তো কাল সেই। পরিস্থিতির আনুকূল্য না পেলে মনের খাঁচায় কোন নির্দিষ্ট একটা পাখিকে জীবনভর পুষি না। কারণ সবচেয়ে বড় সত্য হল, সুখেশান্তিতে বেঁচেবর্তে থাকার চেষ্টা করতে হবে, সবাইকে সেটা দেখাতেও হবে।

4 comments:

রাফি said...

পড়লাম...

শুকতারা said...

হাহাহা। বুঝলাম।

shawon said...

tor(?) blog regular pora hoy...orthat jokhoni net e asi...tobe sob somoy comment deya hoy na....but keep writing.

শুকতারা said...

thanks a lot buddy. :)

tor blog ta to off kore rakhsish onek din. wht abt that?