গানগুলো কি করে মনের কথা বুঝতে পারে? আনন্দের কোন গানের কথা মনে পড়ছে না, কিন্তু দুঃখের গান ঠিক যেন প্রাণের কথা বলে। নানান রকম গান। একেকজনের জন্য একেকটা। একেক সময়ের জন্য একেকটা। একেক ধরণের বিষণ্ণতার জন্য একেকটা। মানুষের চরিত্রের মধ্যে দুঃখবিলাসী একটা প্রবণতা আছে। সুযোগ পেলেই সে ইনিয়ে বিনিয়ে মন খারাপের কোন প্রসঙ্গ টেনে আনে। তারপর খানিক্ষণ সেটাকে নিয়ে রগড়ে রগড়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে। চাই কি একটু চোখের পানিও ঝরানো। খারাপ লাগতে মনে হয় ভাল লাগে। কিভাবে কিভাবে যেন আমাদের কাছে ট্র্যাজিক সব কিছু প্রিয় হয়ে যায়। যেই সিনেমাটায় কোন কাছের কেউ মারা যায় যেই গল্পে বিচ্ছেদ থাকে যেই কবিতায় কান্না কান্না কথা সেসবই বেশি করে ভালবাসি আমরা। এমন কেন হবে? দুঃখকেই কেন আমরা বেশি কাছে টানি? মানুষের না সুখের পেছনে ছোটার কথা?
কোন তপ্ত দুপুর, বিবর্ণ গোধুলি বা নির্ঘুম রাতে অদ্ভুত ছন্নছাড়া লাগে। আমরা এক জীবনে কত কিছুই না হারাই। সেই সব হারানো বিষয়গুলো মিছিল করতে করতে একাকী সময়গুলিতে হানা দেয়। বুকের মধ্যে একটা ডিমের খোসা বা মচমচে শুকনো পাতা গজিয়ে যায় যেটাকে কেউ যেন মুঠির মধ্যে নিয়ে দুমড়াতে থাকে। গানেরা তখন সঙ্গী হয়। নিজেকে সবার থেকে আলাদা সবার থেকে দুঃখী ভেবে নিতে এক রকমের গোপন ভাললাগা কাজ করে। তা সত্যিও হতে পারে। কারণ নিজের কষ্টটাই অনুভূত হয়, অন্যেরটা তো কেবল সহানুভূত হওয়া পর্যন্তই।
Preview
Saturday, August 29, 2009
Tuesday, August 18, 2009
আমার "স্মার্টনেস"
আচ্ছা আমার মত অনেকের কি এমন হয়? মানে এই যে কোন সুন্দর জায়গায় গিয়ে হোঁচট খাওয়া। ধরা যাক কোন ঝলমলে শপিং মল। এখানে চেহারা পলিশ করা হালফ্যাশনের পোশাক পরা তরুণী কিংবা চুলে স্পাইক জাগানো ছেলেপুলে দেখলে নিজেকে কেমন গাধা গাধা মনে হয় কেন? অতি স্মার্ট কিশোরীদের সামনে পড়লে হঠাৎ করে নিজের জামার দৈর্ঘ্যকে বেমানান চুলকে তেল চিপচিপে আর কাঁধের ব্যাগটাকে জীর্ণশীর্ণ মনে হতে থাকে। দামী দোকানে ঢুকলে বৃথাই কোনটাই ঠিক পছন্দ না হবার ভান করি। আমার প্যাতপ্যাতে চাহনি দেখে সবাই এমনিতেই বুঝতে পারে আমি এসেছি উইন্ডো শপিং করতে, এসব কেনার মুরোদ আমার নেই। কোন কিছু আয়ত্বে কুলিয়ে যাবে ভেবে যদি জিজ্ঞেস করেই বসি, দাম শুনে ঢোঁক গিলতে গিলতে প্রাণ নিয়ে বেরিয়ে আসতে হয়। সেই সাথে সতর্ক থাকা লাগে কেউ যেন ঢোঁকের শব্দ শুনতে না পায়।
শুধু কি তাই? নানা সময়ে মুখের কথারও কতরকমই না ছিরিছাঁদ। ধরা যাক বাসায় কোন ফোন আসল এবং আমার হাতেই পড়ল। প্রথমেই খুব মিষ্টি করে বলি, “হ্যালো আসসালামু আলাইকুম"”। এরপর স্রোত কোন দিকে যাবে তা নির্ভর করে ওই পাশের ব্যক্তিটি কে তার উপর। সেটা কি শুধু ফোন? সামনাসামনিও তো তাই। বন্ধুজাতীয় কেউ হলে মুখ খুলে বলে ফেলা যায়, “ওই দোস্ত আর জিগাইস না এগুলার কিসুই আমি জাইন্না"”। বাচ্চা টাইপ পাবলিকের সাথে মুখ বাঁকা করে ন্যাকাও, “ওমা তাই নাকি? আমাকে তোমার একতা পুতুল দাও না”! আবার সেকেন্ড পারসনটা যদি হয় কোন বিশিষ্ট আন্টি বা আংকেল তখন কণ্ঠের ফুলঝুরি দেখে কে? “জ্বী আংকেল/আন্টি আমরা ভাল আছি। আপনার শরীর কেমন?...জ্বী দোয়া করবেন।” সেই সাথে নম্রতা ও ভদ্রতার পরকাষ্ঠা প্রদর্শনের জন্য উপচে পড়া খুশি খুশি একটা ভাব। এই জাতীয় আরোপিত মিষ্টতা নানান সময়ে কাজে দেয়। দেখা গেল টেবিল ভরা পোলাও কোরমা রেজালা। অনেকখানি খাবার পরও যখন চোখের জুলজুলানি থামে না তখন দেবদূতের মত কেউ একজন হয়ত পাতে আরেকটু কিছু তুলে দেয়ার উদারতা দেখাল। এই উদারতাকে পেটুকের মত খালি হাতে নিয়ে নিতে হয়না। নাসিক্যধ্বনির প্রাবল্য এবং উভয়কূল রক্ষা হয় এমন নমনীয় জোরের সঙ্গে “আল্লাহ এত খাব কি করে? আর না।” বলতে হয় এবং অবশ্যই তা চামচটা বাটি থেকে প্লেট পর্যন্ত দূরত্বের অর্ধেকের বেশি পেরিয়ে আসার পর। আরেকটা যেটা আমি প্রায়ই করি সেটা হল আমার মনে খুশির দোলা দিয়ে হোস্টের হাতের চামচ যখন এগিয়ে আসছে তখন হঠাৎ করে কি কারণে যেন ঘুরে অন্যদিকে তাকাই, বেশিরভাগ সময় পায়ে কি যেন সমস্যা হয়। তারপর যখন ঠিক হয়ে বসি লক্ষ্য করি এই ফাঁকে প্লেট রিচার্জ হয়ে গেছে। আর তখন তো “উফ এত খাওয়া যায়?” সুলভ ভঙ্গী করাটা অনেকখানি জলভাত। এগুলো কোনটাই তেমন মুশকিল না। ঝামেলার কাজটা হল চকচকে কোন অফিসের স্মার্ট রিসেপশনিস্টকে ফেস করা। পারতেসি বলতেসি করতেসি বলা মুখে পারছি করছি বা বলছি বলা যে কেন নাভিশ্বাস তোলার মত এতটা প্রাণঘাতী হয়ে পড়ে ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। সুতরাং বুঝতেসি না-কে বোঝা যাচ্ছে না-তে এবং করতেসি-কে হচ্ছে- তে কনভার্ট কর, এটা অনেকটা আরামদায়ক। একই অবস্থা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের চাল্লু ওয়েটার আর সেলসম্যানদের সামনেও। হাই তুলে “মামা কত হইসে” বললে মানইজ্জতের হালুয়া। বরং মুখ টানটান রেখে “বিল” আর “প্রাইস” জানতে চাইতে হয় “এক্সকিউজ মি” সংযোজনপূর্বক। তখন মনে হয় সবাই আমার দিকে চেয়ে বেকুব ভেবে মনে মনে হাসছে। কেমন আচরণ করলে আমরা “পশ” হব তা আমাদের ইংরেজি আদবকেতা দিয়ে মাপজোখ করা কর্তব্য। কাঁটাচামচ ধরা হাতটা পর্যাপ্ত কোণ করে ঘুরলো কিনা, কোকের গ্লাসে চুমুক দিতে শব্দ হয়ে গেল কিনা, সরি থ্যাংকস আর ইট’স ওকে জায়গামত বলা হল কিনা এসব নিয়ে তটস্থ থাকা লাগে আমার মত ভেতো বাঙালিদের। ইংরেজি প্রশ্নের সামনে পড়লে বুকের মধ্যে দ্রিম দ্রিম শব্দ হয় আর টেন্স এন্ড গ্রামার মিলিয়ে ঠিকঠাক জবাব দিয়ে বসতে পারলে যে কি একটা হনু হনু ভাব হয় কি বলব।
আর এসিসূচক সমস্যা তো আছেই। এটার রিমোট কন্ট্রোল কি করে কাজ করে আমি কোনদিনই তা বুঝে উঠতে পারি না। এসি বাড়ানো বা কমানো বলে কিছু আছে কিনা এবং থাকলে তাপের কোন পরিবর্তনটাকে বাড়ানো আর কোনটাকে কমানো বলে তাও জানিনা। ফলে কেউ যদি ঠাণ্ডা লাগছে বা গরম লাগছে বলে টেম্পারেচার বদল করার হুকুম দেয় তখন আমি যতই সহমত হই না কেন বলে ফেলি, নাহ এভাবেই থাকুক। কারো গাড়িতে উঠতে হলে দেখা যায় দরজা হেঁচড়াহেঁচড়ি করছি খুলতে পারছি না। সুতরাং একটু দেরিতে সামনে আসাই ভাল যখন অলরেডি কেউ দরজা খুলে ফেলেছে। এটা আবার বন্ধ করাটাও আরেক যন্ত্রণা। ধুড়ুম শব্দ করে লাগাতে হয় নাহয় ফাঁক রয়ে যায়। উঁচু হিল পরে হাঁটতে পারি না, পেঁচিয়ে পড়ে যাবার যোগাড় হয়। ঘেমে নেয়ে গেলে ব্যাগ ঘেঁটে টিস্যু টাইপের কিছু খুঁজে পাই না। হুট করে ছাতা খুলতে হলে কোথায় যেন আটকে যায়। বোতলের মুখে পানি খেতে গেলে সামনে কেউ থাকলে প্রায়ই ছলকে পড়ে। সিঁড়িতে বা রাস্তায় দুই পায়ের মধ্যে কমপক্ষে একবার ঠোকাঠুকি আমার লাগবেই।
ছেলেদের সামনে তো বটেই, মেয়েদের সামনেও কতই না অপদস্ত লাগে। কবে যে এসব "ক্ষ্যাত" উপসর্গগুলো দূর করতে পারব!
শুধু কি তাই? নানা সময়ে মুখের কথারও কতরকমই না ছিরিছাঁদ। ধরা যাক বাসায় কোন ফোন আসল এবং আমার হাতেই পড়ল। প্রথমেই খুব মিষ্টি করে বলি, “হ্যালো আসসালামু আলাইকুম"”। এরপর স্রোত কোন দিকে যাবে তা নির্ভর করে ওই পাশের ব্যক্তিটি কে তার উপর। সেটা কি শুধু ফোন? সামনাসামনিও তো তাই। বন্ধুজাতীয় কেউ হলে মুখ খুলে বলে ফেলা যায়, “ওই দোস্ত আর জিগাইস না এগুলার কিসুই আমি জাইন্না"”। বাচ্চা টাইপ পাবলিকের সাথে মুখ বাঁকা করে ন্যাকাও, “ওমা তাই নাকি? আমাকে তোমার একতা পুতুল দাও না”! আবার সেকেন্ড পারসনটা যদি হয় কোন বিশিষ্ট আন্টি বা আংকেল তখন কণ্ঠের ফুলঝুরি দেখে কে? “জ্বী আংকেল/আন্টি আমরা ভাল আছি। আপনার শরীর কেমন?...জ্বী দোয়া করবেন।” সেই সাথে নম্রতা ও ভদ্রতার পরকাষ্ঠা প্রদর্শনের জন্য উপচে পড়া খুশি খুশি একটা ভাব। এই জাতীয় আরোপিত মিষ্টতা নানান সময়ে কাজে দেয়। দেখা গেল টেবিল ভরা পোলাও কোরমা রেজালা। অনেকখানি খাবার পরও যখন চোখের জুলজুলানি থামে না তখন দেবদূতের মত কেউ একজন হয়ত পাতে আরেকটু কিছু তুলে দেয়ার উদারতা দেখাল। এই উদারতাকে পেটুকের মত খালি হাতে নিয়ে নিতে হয়না। নাসিক্যধ্বনির প্রাবল্য এবং উভয়কূল রক্ষা হয় এমন নমনীয় জোরের সঙ্গে “আল্লাহ এত খাব কি করে? আর না।” বলতে হয় এবং অবশ্যই তা চামচটা বাটি থেকে প্লেট পর্যন্ত দূরত্বের অর্ধেকের বেশি পেরিয়ে আসার পর। আরেকটা যেটা আমি প্রায়ই করি সেটা হল আমার মনে খুশির দোলা দিয়ে হোস্টের হাতের চামচ যখন এগিয়ে আসছে তখন হঠাৎ করে কি কারণে যেন ঘুরে অন্যদিকে তাকাই, বেশিরভাগ সময় পায়ে কি যেন সমস্যা হয়। তারপর যখন ঠিক হয়ে বসি লক্ষ্য করি এই ফাঁকে প্লেট রিচার্জ হয়ে গেছে। আর তখন তো “উফ এত খাওয়া যায়?” সুলভ ভঙ্গী করাটা অনেকখানি জলভাত। এগুলো কোনটাই তেমন মুশকিল না। ঝামেলার কাজটা হল চকচকে কোন অফিসের স্মার্ট রিসেপশনিস্টকে ফেস করা। পারতেসি বলতেসি করতেসি বলা মুখে পারছি করছি বা বলছি বলা যে কেন নাভিশ্বাস তোলার মত এতটা প্রাণঘাতী হয়ে পড়ে ঠিক বুঝে উঠতে পারিনা। সুতরাং বুঝতেসি না-কে বোঝা যাচ্ছে না-তে এবং করতেসি-কে হচ্ছে- তে কনভার্ট কর, এটা অনেকটা আরামদায়ক। একই অবস্থা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের চাল্লু ওয়েটার আর সেলসম্যানদের সামনেও। হাই তুলে “মামা কত হইসে” বললে মানইজ্জতের হালুয়া। বরং মুখ টানটান রেখে “বিল” আর “প্রাইস” জানতে চাইতে হয় “এক্সকিউজ মি” সংযোজনপূর্বক। তখন মনে হয় সবাই আমার দিকে চেয়ে বেকুব ভেবে মনে মনে হাসছে। কেমন আচরণ করলে আমরা “পশ” হব তা আমাদের ইংরেজি আদবকেতা দিয়ে মাপজোখ করা কর্তব্য। কাঁটাচামচ ধরা হাতটা পর্যাপ্ত কোণ করে ঘুরলো কিনা, কোকের গ্লাসে চুমুক দিতে শব্দ হয়ে গেল কিনা, সরি থ্যাংকস আর ইট’স ওকে জায়গামত বলা হল কিনা এসব নিয়ে তটস্থ থাকা লাগে আমার মত ভেতো বাঙালিদের। ইংরেজি প্রশ্নের সামনে পড়লে বুকের মধ্যে দ্রিম দ্রিম শব্দ হয় আর টেন্স এন্ড গ্রামার মিলিয়ে ঠিকঠাক জবাব দিয়ে বসতে পারলে যে কি একটা হনু হনু ভাব হয় কি বলব।
আর এসিসূচক সমস্যা তো আছেই। এটার রিমোট কন্ট্রোল কি করে কাজ করে আমি কোনদিনই তা বুঝে উঠতে পারি না। এসি বাড়ানো বা কমানো বলে কিছু আছে কিনা এবং থাকলে তাপের কোন পরিবর্তনটাকে বাড়ানো আর কোনটাকে কমানো বলে তাও জানিনা। ফলে কেউ যদি ঠাণ্ডা লাগছে বা গরম লাগছে বলে টেম্পারেচার বদল করার হুকুম দেয় তখন আমি যতই সহমত হই না কেন বলে ফেলি, নাহ এভাবেই থাকুক। কারো গাড়িতে উঠতে হলে দেখা যায় দরজা হেঁচড়াহেঁচড়ি করছি খুলতে পারছি না। সুতরাং একটু দেরিতে সামনে আসাই ভাল যখন অলরেডি কেউ দরজা খুলে ফেলেছে। এটা আবার বন্ধ করাটাও আরেক যন্ত্রণা। ধুড়ুম শব্দ করে লাগাতে হয় নাহয় ফাঁক রয়ে যায়। উঁচু হিল পরে হাঁটতে পারি না, পেঁচিয়ে পড়ে যাবার যোগাড় হয়। ঘেমে নেয়ে গেলে ব্যাগ ঘেঁটে টিস্যু টাইপের কিছু খুঁজে পাই না। হুট করে ছাতা খুলতে হলে কোথায় যেন আটকে যায়। বোতলের মুখে পানি খেতে গেলে সামনে কেউ থাকলে প্রায়ই ছলকে পড়ে। সিঁড়িতে বা রাস্তায় দুই পায়ের মধ্যে কমপক্ষে একবার ঠোকাঠুকি আমার লাগবেই।
ছেলেদের সামনে তো বটেই, মেয়েদের সামনেও কতই না অপদস্ত লাগে। কবে যে এসব "ক্ষ্যাত" উপসর্গগুলো দূর করতে পারব!
বৃষ্টি বৃষ্টি
যার যা নেই তাই পেয়ে গেলে উচ্ছ্বাস হয় বলে জানি। অথচ আমরা এই বৃষ্টির দেশের মানুষেরা প্রতিটা বৃষ্টিতেই কেমন ছেলেমানুষের মত মেতে উঠি। এই যে এই ভর বিকালে হঠাৎ করে তুমুল ঝাপটা বয়ে গেল, এই নিয়ে সদাব্যস্ত মনগুলো একটু কি থমকে দাঁড়ালো না? যার মনে অনেক আনন্দ সে ভেবে পেল তার সাথে সন্ধি করে আকাশ আজ প্রকৃতিকে ধুয়ে মুছে সাজিয়ে দিল। যার হৃদয়ে ক্ষরণ সে বুঝে নিল তার চোখের জল লুকাতে এই বারিধারার বর্ষণ। কেমন করে মাটি থেকে সাগর থেকে জল শুষে গিয়ে হাজার মাইল উপরে উঠে পরস্পরকে সইতে না পেরে ধাক্কাধাক্কি করে ফের আদিনিবাসে নেমে আসে এই ব্যাখ্যায় মন ভরানোর সময় কোথায়? প্রয়োজনটাই বা কি? বৃষ্টি বৃষ্টিই। আর এই প্রিয় বৃষ্টির প্রিয় একটা কাজ হল সে একবার হলেও অনেক পুরানো কোন স্মৃতিকে নাড়িয়ে দিয়ে যাবেই। এখন তুমি নিজেই বুঝে নাও এই অবসরে মন ভাল করে নেবে নাকি খারাপ।
Monday, August 17, 2009
জীবন একটা পুঁতির মালা
একটা বিজ্ঞাপন আছে, আপনার জীবনের গল্পগুলোই আমাদের প্রেরণা। কথাটায় একটু খাদ রয়ে গেছে। বলা উচিত ছিল আপনার জীবনের সুন্দর গল্পগুলোই আমাদের প্রেরণা। অন্যের অসুন্দর গল্পকে কেউ প্রেরণা হিসেবে নেয় না। যখনি এই বিলবোর্ডের দিকে চোখ পড়ে সাথে সাথেই রাস্তার বাকি মানুষগুলোর দিকে নজর চলে যায়। প্রত্যেকটা মানুষই না জানি কত গল্প পকেটে পুরে হেঁটে চলেছে। নিজের গল্প দিয়ে গাঁথা অদৃশ্য মালা থেকে একটা বা একেকটা পুঁতি খুলে দেখালেই হয়ত চমকে উঠব। কোন পুঁতি বর্ণহীন স্বচ্ছ, কোনটা ধুলো মাখানো নোংরা, কোনটা আবার নানা রঙে ঝলমলে। কোনটা একটু ছোট, কোনটা অনেক বড়। হতে পারে বাজারের মালার মত রঙের সাথে রঙের আকারের সাথে আকারের সামঞ্জস্য বজায় নেই অথচ এই অনিয়মিত বিন্যাসই এখানে বিন্যস্ততা। আমরা সময়ে অসময়ে মালাটা বের করে গোপনে হাতড়ে হাতড়ে দেখি। পুঁতিগুলোর উপর হাত বুলাই। নিজেদের কৃতিত্ব বা ভুল কিংবা বিধাতার লীলাখেলার নমুনা আমাদের ছোটখাট জীবনে কি কি ছাপ রেখে গেছে তা নিয়ে পুনর্বার মস্তিষ্ককে ব্যতিব্যস্ত করি। এই মুহূর্তে বারান্দার বাইরে রাস্তায় যেই পোড় খাওয়া চেহারার প্রৌঢ়া বসে আছেন সাহায্যের আশায় না জানি তার গল্পের ঝুলিতে কি কি আছে। পাশের বাসার তেজোদীপ্ত বাচ্চা মেয়েটারও নিশ্চয়ই এতদিনে দেখা আর বোঝা হয়ে গেছে পৃথিবীর অনেক কিছুই। এভাবে করেই দিনে দিনে মালায় পুঁতির সংখ্যা বাড়তে থাকে। অদ্ভুত ব্যাপার হল প্রত্যেকটা পুঁতিকেই আমরা একইভাবে যত্ন করে পেলে পুষে রাখি। চকচকেগুলোকেও যেমন, ম্যাড়ম্যাড়েগুলোকেও তেমনি। কারণ আমরা জানি কিছুমাত্র বৈষম্য করতে গেলেই সুতো ছিঁড়তে হয় নতুবা পুঁতি ভেঙে জায়গাগুলো ফোকলা করে নিতে হয়। কিন্তু তাহলে কি আর তাকে সত্যিকার মালা বলা চলে?
Subscribe to:
Posts (Atom)