Sunday, April 13, 2008

গল্প লেখা

যারা লেখক তারা কেমন করে মনের কথাটা লিখে ফেলেন তা খুব অবাক লাগে। পড়তে পড়তে দেখা যায় আরে আমি তো ভেবেছিলাম এই কথাটা শুধু আমিই ভাবি। অর্থাৎ কোন একটা ব্যাপার তাঁরা কিভাবে যেন পাঠকের মন মত করেই প্রকাশ করে ফেলেন। হতে পারে আমি একটা জিনিস যেভাবে ভাবি সেই জিনিসটাকে অনেকেই সেভাবেই ভাবে। কিন্তু প্রকাশটা সবাই করতে পারে না, পারেন আমার হাতে যেই বই তার লেখক। Aristotle এর ধারণা fiction লেখার আগে পুরো প্লট সাজিয়ে নিয়ে বসতে হয়। আসলেই কি তাই? আমি ঠিক জানি না। কেউ কেউ তো হঠাৎ করেই খুব চমৎকার একটা উপন্যাস বা গল্প বা কবিতাকে রূপ দিয়ে ফেলতে পারেন। তেমন চিন্তাভাবনা ছাড়াই। সারাজীবনে আমি কতবার চেষ্টা করেছি কিন্তু কিছুতেই পারি না। কেউ কেউ বলে সবাইকে দিয়ে সব কাজ হয় না। আবার কেউ কেউ বলে চেষ্টা করলে সবই হয়। কিছুদিন আগে খুব উৎসাহ নিয়ে একটা গল্প লিখতে শুরু করেছিলাম...বছর চল্লিশেক বয়সের এক নারী স্বামীর সঙ্গে দেশের বাইরে থাকে। দু’জন সন্তান আছে তার। তার জীবনের একমাত্র প্রেমটা ব্যর্থ হয়। একদিন সে খালি বাসায় বসে দেশে ফেলে আসা পুরনো দিনের নানা কথা ভাবছে। বিশেষ করে এই পর্যন্ত যতজন পুরুষকে সে কাছ থেকে দেখেছে তাদের কথা। কারো জন্যই সে কোন টান অনুভব করে না এখন। জীবনে কি কি না পাওয়া আছে তাও ভাবছে। হঠাৎ করেই প্রাইমারিতে পড়ার সময়কার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধুর কথা মনে পড়ে যায়। শান্তশিষ্ট ধরণের একটা ছেলে যে খুব কম বয়সে মারা যায়। ছেলেটা মেয়েটার জন্য অনেক সময় নিয়ে একটা উপহার তৈরি করছিল। বলেছিল তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুকে সে একটা বিশাল সারপ্রাইজ দিবে। মেয়েটারও অধীর অপেক্ষা। এর মাঝেই ছেলেটা অসুখে পড়ে, কিছুদিন পর মারা যায়। বড় হতে হতে মৃত বন্ধুর কথা দিনে দিনে সে ভুলেই যায় অনেকটা। আজকে হঠাৎ করেই তার মনে হয় এত দামী ঘরবাড়ি গোছানো সংসার সব কিছু বৃথা। কখনোই জানা হবে না সেই সারপ্রাইজটা কি ছিল। সে প্রচন্ড অস্থির অনুভব করতে থাকে সেই উপহারটা হাতে পাওয়ার জন্য...এইরকম ছিল আমার গল্পটা যেটাকে কিছুতেই চেহারা দিতে পারিনি। দুই পৃষ্ঠা এগিয়েই শেষ।

এলেবেলে টাইপের কয়েকটা কবিতার কথা বাদ দিলে সারাজীবনে পেপারের দোর পর্যন্ত একটা গল্পই নিয়ে যেতে পেরেছিলাম। দুঃখ ছিল যে সেখানে নিজের নামের আগে “সংগ্রহ” শব্দটা জুড়ে দিতে হয়েছে কারণ সেটা গ্রামে গিয়ে শোনা কাহিনীর লৈখিক রূপ, মৌলিক কিছু না। সেই বাচ্চাকালে কবি লেখক জাতীয় কিছু হবার বাসনা ছিল। এখন হারিয়ে গেছে।

1 comment:

Shahidul Mahfuz said...

bhumika ta debar por maje asto ekta golpo jurey dewa holo...ei dui subject e to duto alada lekha pawa jeteu parto...

golpo ta shundor silo...kintu golpo ta k koto dur tana jeto?....

"োন একটা ব্যাপার তাঁরা কিভাবে যেন পাঠকের মন মত করেই প্রকাশ করে ফেলেন"....ei karonei hoito ba pathok er shistri. ekta lekha ba ekta golp er maje pathok hoito ba nijekei khujey fere...