অনেক রাত হয়েছে। আমার খুব সহজে ঘুম পেয়ে যায়। আজকে কেন যেন চোখের দুই পাতার মধ্যে আকর্ষণ নেই। সেই সাথে মাথাটাও ফাঁকা। গভীর রাতে হালকা চালের বই পড়া আমার জন্য ভাল। হুমায়ূন আহমেদের একটা বই পড়ছিলাম সেটাও ভাল লাগছেনা চালিয়ে যেতে। সত্যি কথা বলতে কি একটু ভয় ভয় লাগছিল। গভীর রাতে বই পড়ে বা সিনেমা দেখে ভয় পাওয়ার সাহস আমার নেই। সমস্যা হল কি করব বুঝে উঠতে পারছিনা। দুম করে যে খাতা খুলে বসলাম এটাই বা কি করে এগিয়ে নেব জানি না। ঠিক এই সময়ে কত জায়গায় কত জন জেগে আছে! কারো মন ভাল কারো মন খারাপ কেউ হয়ত আমার মত মাঝামাঝি। প্রকৃতি দেখতে পারলে ভাল লাগত। পুরানো বাসাটার কথা মনে পড়ছে। সেখানে উঁচুতলায় বিশাল আকাশ দেখা যেত। ভাল না লাগলে লাগোয়া বাচ্চা বারান্দায় বসে পড়লেও চলত। এখানে জানালায় আকাশ তো মন ভরে দেখা যায়ই না, বারান্দার নাগাল পেতে হলেও অভিভাবক পাড়া ডিঙিয়ে যেতে হবে। সুতরাং নিজের ঘরের মধ্যেই ঘুরপাক খাওয়া শ্রেয়। বুঝতে পারছি শুয়ে পড়া উচিত। নতুবা সকালে গা তোলা মুশকিল হয়ে যায়। ধাড়ি মেয়ের মাঝসকালে ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে বিছানা ছাড়াটা পরিবারের চোখে দৃষ্টিকটু। যখনই শুই না কেন ঠিক সময়ে গাত্রোত্থান করতে হবে। ফলে ঘুমটা ঠিকমত হয়না। এরকম কয়েকদিন চললে চোখের নিচে খানিকটা কালো হয়ে আসে। কিছু বছর আগে হলেও চোখের কোলে কালচে দেখা গেলে সমব্যাথী কেউ কেউ জানতে চাইত রাতে ঘুম হয়না কিসের চিন্তায়। আঁতেল টাইপ কেউ জিজ্ঞেস করলে আমি জানিয়ে দিতাম না যে ভাই আমি সময়মতই ঘুমাই, জন্ম থেকে আমার চোখই এমন। বরং একটা ভাব ধরতাম যেন আসলে আমার মনে অনেক দুশ্চিন্তা, তোমরা কেউ বুঝবে না আমার বুকে কত পাথর চাপা কষ্ট। দুঃখের কথা হল আজকাল কেউ কিছু প্রশ্নও করে না। যেন বড় মেয়েদের পড়াশোনা বা টেনশানের কারণে রাত জাগতেই হয় তাই চোখের নিচে কালি পড়ে যেতেই পারে।
আমি ঠিক করলাম যখন মাথা ধরবে বা ঘুম পাবে তখন শুতে যাব, তার আগে না। জিনিসটা শীঘ্রই হবে। সুতরাং এই অল্প সময়টাতে সুন্দর কিছু ভাবা যায়। সুন্দর না ভাবতে চাইলে খারাপ কিছুও ভাবা যায়। খারাপ কোন কিছু মনে আনতে চাইলে কিছু ছাড়া ছাড়া বিষয় সামনে আসে। বিচ্ছিরি কোন বস্তু নৃশংস কোন দৃশ্য সবকিছুই আসে আলাদা আলাদা। অথচ সুন্দর কিছু ভাবতে গেলেই চলে আসে একটা ধারাবাহিক ছবি। তৈরি হয় একটা গল্প। সেই সুন্দর কাহিনীগুলোতে মানুষ নিজেকে অংশীভূত করে ফেলে। এর কারণ কি এই যে আমরা সুন্দরকে ভালবাসি, তাকে ধারণ করতে চাই নাকি আমরা সুন্দরের অভাবে আছি বলে স্বপ্নে তা-ই ফিরে ফিরে আসে? হবে এর মাঝে কোন একটা। বা তৃতীয় কোন কারণ। আমি রাত কাটানোর জন্য এই উচ্চমার্গীয় প্রশ্নটার উত্তর হাতড়াতে পারি। উদ্ভট কথা ভেবে ফেলেও রাখতে পারি। কারণ আমার চোখের ভেভরের কোন একটা অংশ বিদ্রোহ করছে। এবার বিশ্রামে পর্যবসিত হওয়া উচিত। কম্পিউটার অফ করার ঝক্কিকর কাজটা এখন করতেই হবে। তাছাড়া অর্থহীন লাগামছাড়া কথাবার্তা কতক্ষণই বা চালিয়ে যাব। নেহায়েত নিজের খাতা বলে যা খুশি তাই করে যাচ্ছি।
অনেক অনেক দিন পর লিখতে বসলাম। পুরোপুরি আবর্জনা হলেও তোয়াক্কা করতে চাচ্ছিনা। সুস্থ মস্তিষ্কে পড়ে দেখে যদি বিরক্ত হই ধরে নেব এটা খাতার পেছনের রাফের পাতা ছিল। ছিঁড়ে গিয়েছিল বলে সামনে গুঁজে রেখেছি।
Saturday, February 21, 2009
Subscribe to:
Posts (Atom)